বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

চীনের ভয়ঙ্কর ভাইরাস নিয়ে জরুরি বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

চীনের ভয়ঙ্কর ভাইরাস নিয়ে জরুরি বৈঠকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

স্বদেশ ডেস্ক:

চীনের রাজধানী বেইজিং ও সাংহাইসহ বিভিন্ন শহরে রহস্যজনক ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসে নতুন করে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক দিনে চারজনের মৃত্যু হলো। কর্তৃপক্ষ বলছে, একজন থেকে অন্যজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এক চিকিৎসাকর্মীও রয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

চীন ছাড়াও জাপান, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে সংস্থাটি জানায় যে, সম্ভবত প্রাণিদেহ থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় চীনের উহান শহরে এই ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামুদ্রিক খাবার বিক্রির একটি বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। চীনা সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান জং ন্যানসান জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে দুই ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্যদের দ্বারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, হাসপাতালগুলোতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মীর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বুধবার জেনেভাভিত্তিক জাতিসঙ্ঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা বলছে, এই ভাইরাসের প্রকোপ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে কতটা হুমকি তা পরিমাপ করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

চীনে ভ্রমণ বা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আনা হয়নি। তবে ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন দল এ বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। জং ন্যানসান জানিয়েছেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে দুই ব্যক্তি তাদের পরিবারের সদস্যদের দ্বারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, নতুন ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে এবং লোকজনের জীবন বাঁচানোকেই সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দেয়া হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত নতুন করে আরো ২১৭ জনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৯৮ জনই উহান প্রদেশের বাসিন্দা।

অপর দিকে বেইজিংয়ে নতুন করে আরো পাঁচজন এবং গুয়াংডং প্রদেশে আরো ১৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী ২২২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত সোমবার প্রথম একজনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।

এ দিকে গত কয়েক দিনে উহান শহর থেকে উদ্ভূত এ ভাইরাসটিতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকার খবরে এশিয়ার বাজারগুলোতে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। চীনা নববর্ষের ছুটি উপলক্ষে দেশটির কোটি কোটি নাগরিক এক শহর থেকে অন্য শহরে ভ্রমণের প্রস্তুতি নেয়ায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ মারাত্মক আকার ধারণ করছে । শুক্রবার থেকে চীনে নববর্ষের ছুটি শুরু হচ্ছে।

ভাইরাসটি ছোঁয়াচে, জানার পর থেকে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো নতুন এ করোনা ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা-নিরীক্ষার গতি বাড়িয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বুধবার বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির সংক্রমণের সাথে ২০০-০৩ সালের দিকে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সিভিয়ার অ্যাকুট রেসপারেটরি সিনড্রোমের (সার্স) সাদৃশ্য রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ায় তার ছাপ এশিয়ার শেয়ারবাজারেও পড়ছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877